আল-কুরআনের আলোকে আরবী ভাষা শিক্ষা
আল-কুরআনের আলোকে গবেষণামূলক বই লেখার নিয়মাবলী
আল-কুরআনের প্রতিটি মৌলিক শব্দ দ্বারা এক একটি গবেষণামূলক বই লেখা যাবে। আপনি একটি শব্দ বেছে নিন। শব্দটি যে যে আয়াতে আছে সে সকল আয়াতগুলেকে একত্রিত করে এক স্থানে তালিকা আকারে সাজাতে হবে। এ ক্ষেত্রে বর্তমানে আল-কুরআনের শব্দের উপর অনেক আরবী ও বাংলা অভিধান পাওয়া যায়, যে গুলো থেকে সহায়তা নেয়া যেতে পারে। তারপর আয়াত গুলোর অর্থ জেনে নিতে হবে। উক্ত অর্থ উপর গবেষণা করে সে আলোকে একটি সুন্দর পরিকল্পনা দাড় করাতে হবে। আয়াত গুলোর আলোকে কি কি শিরোনামের উপর বইটি লেখা হবে তা পরিকল্পনা মাফিক সূচী পত্র আকারে সাজিয়ে ফেলতে হবে। প্রতিটি শিরোনামই এক বা একাধিক আয়াতের আলোকে হতে হবে। এভাবে সাজায়ে লিখলে বহু বইলেখা যাবে। এর সাথে বিষয়ভেদে বহু বই এর সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। তবে সেগুলোর তথ্য নির্দেশিকা প্রদান করতে হবে। প্রতিটি কাজের সম্পাদনা করার কিছু নিয়ম রয়েছে। গবেষনা মূলক প্রবন্দ ও বই লেখার বিশেষ নিয়মাবলী রয়েছে। নিম্নে এ মর্মে সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রদান করা হলো।তথ্য নির্দেশিকা :
গবেষণায় তথ্য নির্দেশিকার গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলা, আরবী ও ইংরেজী যে কোন ভাষায়ই গবেষণা কর্ম সম্পাদন করা হোক না কেন সঠিক পদ্ধতিতে তথ্য নির্দ্যেশ প্রদান অপবিহার্য। তথ্য নির্দেশ লেখার প্রচলিত নিয়ম অনুসরন না করা হলে গবেষণা কর্মটি অসম্পূর্ণ হবে। তাই তথ্য নির্দেশিকা প্রদানের প্রচলিত রীতির অনুসরনের মাধ্যমে গবেষণা কর্মে তথ্য নির্দেশ প্রদান করা আব্যশ্যক।নিম্নে গবেষণা কর্মের তথ্য নির্দেশ প্রদানের প্রচলিত রীতির কতিপয় নমুনা পেশ করা হলো :
আল-কুরআন: গবেষণা কর্মে পবিত্র কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করলে নিম্নোক্ত নিয়ম অনুসরণ অতি উত্তম।
১. আল-কুরআন: ২(আল বাক্বারা): ২০৫।
২. অথবা, আল-কুরআন-২:২০৬।
৩. অথবা, সূরা আল বাক্বারা- ১৮৫। প্রথমটিই সর্বোত্তম।
হাদীস:
হাদীসের উদ্ধৃতি গবেষণায় উল্লেখ করলে নিম্নোক্ত ভাবে তথ্য নির্দেশ প্রদান করতে হবে।
১. মুহাম্মাদ ইসমাঈল আল-বুখারী, আল-জামে আস-সহীহ, ২য় খন্ড (বৈরুত: দারুল ফিকার, প্রথম সংস্করন (১৯৮৫ইং), কিতাবুল অহী, হাদীস নং-২।
২. অথবা, হাদীসের নম্বর উল্লেখ করতে না পারলে পৃষ্ঠা নং উল্লেখ করতে হবে।
৩. একই হাদীস গ্রন্থ থেকে একাধিক হাদীস পরপর উল্লেখ করলে প্রাগুক্ত, হাদীস নং-/ পৃষ্ঠা নং- উল্লেখ করতে হবে। আর যদি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে হাদীস উল্লেখ করা হয় সে ক্ষেত্রে লেখকের নাম, প্রাগুক্ত, হাদীস নং-/ পৃষ্ঠা নং- লিখতে হবে।
৪, শেষে হাদীসের মান উল্লেখ করা আবশ্যক।
অন্যন্য গ্রন্থ
কুরআন ও হাদীস ভিন্ন অন্য কোন গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিলে নিম্নোক্ত ভাবে তথ্য নির্দেশ প্রদান করতে হবে:
* লেখকের নাম, গ্রন্থের নাম, খন্ড (প্রকাশনার স্থান, প্রকাশনা সংস্থার নাম, সংস্করণ, প্রকাশকাল), পৃষ্ঠা নং লিখতে হবে। যদি প্রকাশকাল না থাকে তাহলে তা.বি. লিখতে হবে।
* একই গ্রন্থের একাধিক উদ্ধৃতি পরপর ব্যবহার করলে প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা নং উল্লেখ করাই যথেষ্ঠ হবে। আর যদি পরপর না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে হয় তাহলে প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা নং- এভাবে লিখতে হবে।
* একই লেখকের একাধিক গ্রন্থের উদ্ধৃতি দেয়া হলে প্রতিটি গ্রন্থের প্রথমবার উল্লেখের সময় লেখকের নাম, গ্রন্থের নামসহ ইতোপূর্বে উল্লেখিত নিয়মে লিখতে হবে। দ্বিতীয় বার উদ্ধৃতি দিলে লেখকের নাম ও গ্রন্থের নাম, পৃষ্ঠা নং- উল্লেখ করতে হবে। আর যদি পরপর উদ্ধৃতি দেয়া হয় তাহলে প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা নং উল্লেখ করাই যথেষ্ঠ।
* অনুবাদ গ্রন্থের ক্ষেত্রে মূল লেখকের নাম, অনুবাদকের নাম, গ্রন্থের নাম এবং পূর্বে উল্লেখিত নিয়মানুযায়ী লিখতে হবে।
* গ্রন্থের নামটি সব সময় ইটালিক বোল্ড করে টাইপ করতে হবে।
* গবেষণা জার্নাল, পত্রিকার উদ্ধৃতি গবেষণা কর্মে ব্যবহার করলে নিম্নোক্ত ভাবে তথ্য নির্দেশ প্রদান করতে হবে।
* গবেষণা জার্নালেব প্রবন্ধ হলে যেমন- ড. মোঃ মঈনুল হক, "আল-কুরআনের কতিপয় আয়াতের তাফসীর এবং বর্তমান বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা-একটি পর্যালোচনা" দি ইসলামিক ইউনিভাসিটি স্টাডিজ, পার্ট-এ, ভলিউম-৯, সংখ্যা-২, জুন/২০০১ইং, পৃষ্ঠা নং-১৭। এভাবে উল্লেখ করতে হবে।
* পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধের ক্ষেত্রে যেমন- মোঃ আজিজুর রহমান, "বিশ্বায়নের ভার পৃথিবী সইতে পারছে না", (ঢাকা: দৈনিক ইনকিলাব, ১২ সেপ্টেম্বর/২০০৪ইং), পৃষ্ঠা নং-৯।
* প্রকাশিত গবেষণা কর্ম (এম.ফিল/পিএইচ.ডি) থেকে উদ্ধৃতি দিলে শিরোনাম লেখার সময় একটি কমা ব্যবহার করতে হবে। যেমন- মোঃ আব্দুল বারিক, 'আল-কুরআনের বৈজ্ঞানিক সূত্র- একটি পর্যালোচনা', এম.ফিল গবেষণা কর্ম, ২০০৪ইং পৃষ্ঠা নং-১৭৮।
গবেষণায় ব্যবহৃত শব্দ সংক্ষেপ:
গবেষণার গবেষককে কতিপয় স্বীকৃত নিয়ম, কানুন অনুসরণ করে গবেষণা কার্য পরিচাকলনা করতে হয়। তবে একট কথা মনে রাখতে হবে সব নিয়মই স্বতঃসিদ্ধ, সার্বজনীন বা সর্বজনীন নয়, সে ক্ষেত্রে গবেষককে তার গবেষণা কর্মের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে কোন নিয়মকে একই ভাবে ব্যবহার করতে হবে। একেক পৃষ্ঠায় একেক রকম বা ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায় গিয়ে নিয়মের পরিবর্তন করা যাবে না। এটা গবেষণা নিয়মের পরিপন্থি। এভাবে শব্দ সংক্ষেপের কিছু নিয়ম রয়েছে যা অনুসরনীয়, তবে গবেষক ইচ্ছা করলে এবং অধিক যুক্তি যুক্ত মনে হলে নিজস্ব কোন পদ্ধতি আবিষ্কার এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে শুরুতে তা বলে দেয়া প্রয়োজন।
গবেষণা কর্মের একটি শব্দ সংক্ষেপের নমুনা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
আ.- আলাইহিস্ সালাম। রা.- রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর. রাহিমাহুল্লাহু / রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। হি. আল হিস্ত্রী সাল। খৃ.- খৃষ্টাব্দ / খ্রীষ্টাব্দইং- ইসায়ী সাল / ইংরেজী সাল (তবে ইংরেজী সাল বলতে কোন সাল নেই)। ব.- বঙ্গাব্দ। খৃ.পূ.- খৃষ্ট পূর্ব। জ. জন্ম। মৃ.- মৃত। ড.- ডক্টর। দ্র.- দ্রষ্টব্য। প্রা.- প্রাইভেট। লি.- লিমিটেড। মাও. মাওলানা।কোং- কোম্পানী। চৌ.- চৌধুরী। অনু.- অনুবাদ। অন:- অনুদিতদ। সং- সংস্করণ। খ. খন্ড । পৃ.- পৃষ্ঠা। তা.বি.- তারিখ বিহীন। এম. মুহাম্মাদ। এ./আঃ- আব্দুল। পূর্বোক্ত- যা পূর্বে বলা হয়েছে। প্রাগুক্ত- যা পূর্বে বলা হয়েছে। তদেব- যা পূর্বে বলা হয়েছে। বুখারী- আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈ আল-বুখারী মুসলিম- মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ আল কুশাইরী। তিরমিযী- আবু ঈসা মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা আত্-তিরমিযী আবু দাউদ- আবু দাউদ সুলাইমান ইবনু আশআস আস-সিজিস্তি। নাসায়ী- আবু আব্দির রহমান মুহাম্মাদ ইবনু শুয়াইব ইবনু মাজাহ- আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াযিদ ইবনু মাজাহ আল কাযভী। ই.ফা.বা. - ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। বা.এ.- বাংলা একাডেমী। ঢা.বি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। রাবি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। চবি. ইবি. ইত্যাদি। ই.ব্যা.- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি:।