কপোতাক্ষ নদ
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
১. কবিতার মূলভাব (Summary)
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা (Sonnet)। এই কবিতার মূল সুর হলো গভীর দেশপ্রেম ও শৈশবের স্মৃতিকাতরতা। কবি সুদূর ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে বসে তাঁর জন্মভূমির স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদকে স্মরণ করেছেন। তিনি বহু দেশ ও বহু নদ-নদী দেখলেও কপোতাক্ষের মতো শান্তি ও মমতা কোথাও পাননি। এই নদের জলকে তিনি মায়ের স্তন্যদুগ্ধের (দুগ্ধ-স্রোতোরূপী) সাথে তুলনা করেছেন। প্রবাস জীবনে একাকী বসে তিনি যেন কল্পনায় নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কবিতার শেষে তিনি নদের কাছে বিনীত মিনতি জানিয়েছেন, যেন নদ তাকে মনে রাখে এবং বঙ্গবাসীর কাছে কবির এই গভীর ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দেয়।
২. কবি পরিচিতি ও সাহিত্যকর্ম
- নাম: মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
- জন্ম: ২৫শে জানুয়ারি, ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে (যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে)।
- শিক্ষা: কলকাতার হিন্দু কলেজ।
- ধর্মান্তর: ১৮৪৩ সালে তিনি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন।
- অবদান: বাংলা সাহিত্যে সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক।
- বিখ্যাত মহাকাব্য: মেঘনাদবধ কাব্য।
- নাটক: কৃষ্ণকুমারী, শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী।
- প্রহসন: একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ।
- মৃত্যু: ২৯শে জুন, ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে।
৩. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা (Quick Facts)
- কবিতার ধরণ: চতুর্দশপদী কবিতা (Sonnet)।
- উৎস গ্রন্থ: চতুর্দশপদী কবিতাবলী।
- রচনাস্থল: ফ্রান্সের ভার্সাই নগরী।
- মোট চরণ: ১৪টি।
- প্রতি চরণে মাত্রা: ১৪টি।
- অষ্টক (Octave): প্রথম ৮ চরণ (ভাবের প্রবর্তনা)।
- ষষ্ঠক (Sestet): শেষ ৬ চরণ (ভাবের পরিণতি)।
- দুগ্ধ-স্রোতোরূপী: কপোতাক্ষ নদ।
- সখা-রীতে: বন্ধু বা সখা হিসেবে (নদকে)।
৪. গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (ক-বিভাগ)
- ১. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার রচয়িতা কে?
উ: মাইকেল মধুসূদন দত্ত। - ২. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কোন ধরনের কবিতা?
উ: চতুর্দশপদী কবিতা বা সনেট (Sonnet)। - ৩. কবি কবিতাটি কোথায় বসে লিখেছিলেন?
উ: ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে। - ৪. ‘সতত’ শব্দের অর্থ কী?
উ: সর্বদা বা সব সময়। - ৫. সনেটের প্রধান অংশ কয়টি ও কী কী?
উ: দুটি। যথা: ১. অষ্টক (Octave) এবং ২. ষষ্ঠক (Sestet)। - ৬. সনেটের অষ্টকে কী থাকে?
উ: ভাবের প্রবর্তনা। - ৭. সনেটের ষষ্ঠকে কী থাকে?
উ: ভাবের পরিণতি। - ৮. কবি কপোতাক্ষ নদের জলকে কিসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উ: মায়ের দুগ্ধস্রোতের সঙ্গে (দুগ্ধ-স্রোতোরূপী)। - ৯. ‘ভ্রান্তি’ শব্দের অর্থ কী?
উ: ভুল। - ১০. চতুর্দশপদী কবিতায় কয়টি চরণ ও মাত্রা থাকে?
উ: ১৪টি চরণ এবং প্রতি চরণে ১৪টি মাত্রা (অক্ষর) থাকে। - ১১. কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কী দেয়?
উ: জলরূপ কর বা রাজস্ব। - ১২. বাংলা সনেটের প্রবর্তক কে?
উ: মাইকেল মধুসূদন দত্ত। - ১৩. ‘বিরলে’ শব্দের অর্থ কী?
উ: একান্ত নিরিবিলিতে বা নির্জনে। - ১৪. ‘বঙ্গজ জন’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
উ: বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী মানুষদের বা বঙ্গবাসীদের।
৫. সৃজনশীল প্রশ্ন-১ (প্রবাস জীবন ও স্মৃতিকাতরতা)
উচ্চশিক্ষার জন্য প্রকৌশলী আরমান দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে জাপানে বসবাস করছেন। টোকিও শহরের আধুনিকতা, প্রাচুর্য এবং যান্ত্রিক শৃঙ্খলার মাঝে তার দিনগুলো কেটে যায়। কিন্তু প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে দাঁড়িয়ে যখন তিনি সূর্যাস্ত দেখেন, তখন তার মনে পড়ে নড়াইলের চিত্রা নদীর কথা। ছোটবেলায় বর্ষাকালে সেই নদীর ঘোলাজলে সাঁতার কাটা, বন্ধুদের সাথে মাছ ধরার স্মৃতি তাকে আজও আবেগাপ্লুত করে। তিনি মনে মনে বলেন, "এই বিশাল সমুদ্রের জলরাশি আমার তৃষ্ণা মেটাতে পারে না, যা আমার গ্রামের ছোট্ট নদীটি পারত।" কর্মব্যস্ত জীবনে তিনি প্রায়ই কল্পনায় সেই নদীর কলতান শুনতে পান।
- ক. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ‘ভ্রান্তি’ শব্দের অর্থ কী?
- খ. ‘বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ-দলে’— পঙক্তিটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
- গ. উদ্দীপকের আরমান সাহেবের অনুভূতির সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির অনুভূতির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
- ঘ. “উদ্দীপকটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আংশিক ভাবকে ধারণ করলেও মূল সুরটি একই।”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
✅ সৃজনশীল প্রশ্ন-১ এর বিস্তারিত উত্তর
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ‘ভ্রান্তি’ শব্দের অর্থ হলো— ভুল (এখানে ঘোরের মধ্যে বা স্বপ্নের মতো বোঝানো হয়েছে)।
‘বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ-দলে’— পঙক্তিটি দ্বারা কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি এবং কপোতাক্ষ নদের প্রতি তাঁর অনন্য ভালোবাসার কথা বুঝিয়েছেন।
কবি জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন এবং সেসব দেশের বড় বড়, বিখ্যাত সব নদ-নদী দেখেছেন। কিন্তু কোনো নদের সৌন্দর্য বা জলই তাঁকে কপোতাক্ষ নদের মতো তৃপ্তি দিতে পারেনি। পৃথিবীর অন্য কোনো নদ তাঁকে জন্মভূমির নদীর মতো মায়ের স্নেহের বন্ধনে বাঁধতে পারেনি—এ কথাটিই কবি এই চরণের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
উদ্দীপকের আরমান সাহেবের অনুভূতির সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির অনুভূতির সাদৃশ্য হলো— উভয়েই প্রবাস জীবনে অবস্থান করে জন্মভূমির শৈশবের স্মৃতি ভুলতে পারেননি এবং উভয়ের মধ্যেই গভীর দেশপ্রেম ও স্মৃতিকাতরতা বিদ্যমান।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সুদূর ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে বসে তাঁর শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদকে স্মরণ করেছেন। প্রবাসের চাকচিক্য তাঁকে জন্মভূমি থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। তিনি সর্বক্ষণ কপোতাক্ষ নদের কথা ভাবেন এবং কল্পনায় তার কলকল ধ্বনি শোনেন।
অন্যদিকে, উদ্দীপকের আরমান সাহেব জাপানের টোকিও শহরের আধুনিকতার মাঝে বসবাস করেও তাঁর গ্রামের চিত্রা নদীকে ভুলতে পারেননি। প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল জলরাশি দেখেও তাঁর মনে পড়ে গ্রামের সেই ছোট্ট নদীর কথা। জাপানের যান্ত্রিক জীবনে থেকেও তিনি কল্পনায় নদীর ডাক শুনতে পান।
কবিতায় কবি যেমন বলেছেন, কপোতাক্ষের জল তাঁর কাছে মায়ের দুধের মতো, তেমনি উদ্দীপকের আরমান সাহেবের কাছেও চিত্রা নদীর স্মৃতি পরম শান্তির। প্রবাসে থেকেও নিজ দেশের নদীর প্রতি এই যে নাড়ির টান—এই দিক থেকেই আরমান সাহেব এবং কবির অনুভূতি এক ও অভিন্ন।
“উদ্দীপকটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আংশিক ভাবকে ধারণ করলেও মূল সুরটি একই।”— মন্তব্যটি যথার্থ এবং সুচিন্তিত।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূল সুর হলো গভীর দেশপ্রেম, প্রবাস জীবনের হাহাকার এবং শেকড়ের প্রতি টান। কবি এখানে শুধু নদের কথাই বলেননি, বরং নদের মাধ্যমে তিনি তাঁর জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। কবিতার শেষ অংশে কবি নদের কাছে মিনতি জানিয়েছেন, যেন নদ তাঁকে মনে রাখে এবং বঙ্গবাসীর কাছে তাঁর এই ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দেয়।
উদ্দীপকের আরমান সাহেবের মধ্যে কবিতার এই স্মৃতিকাতরতার দিকটি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি জাপানের আধুনিক জীবনে থেকেও গ্রামের চিত্রা নদীর স্মৃতিতে ব্যাকুল। সাগরের বিশালতা তাঁর মনের তৃষ্ণা মেটাতে পারে না। এটি কবিতার প্রথম অংশের (অষ্টকের) ভাবের সাথে মিলে যায়, যেখানে কবি কপোতাক্ষের প্রতি তাঁর মুগ্ধতা ও স্মৃতির কথা বলেছেন।
তবে, কবিতায় কবি যেমন নদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন— “লইছে যে তব নাম বঙ্গের সংগীতে”— অর্থাৎ বঙ্গবাসীর কাছে তাঁর নাম পৌঁছে দেওয়ার যে অনুরোধ, উদ্দীপকের আরমান সাহেবের মধ্যে সেই সুনির্দিষ্ট বার্তা বা প্রতিদান চাওয়ার বিষয়টি অনুপস্থিত। উদ্দীপকটি মূলত স্মৃতিচারণ ও নস্টালজিয়ায় সীমাবদ্ধ। কিন্তু কবিতার গভীরতা আরও ব্যাপক, সেখানে আছে স্বদেশের কাছে ফিরে যাওয়ার আকুতি এবং নিজেকে মনে রাখার বিনীত প্রার্থনা।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে কবির স্মৃতিকাতরতা ও ভালোবাসার দিকটি উঠে এলেও কবিতার সম্পূর্ণ আবেদন (বিশেষ করে ষষ্ঠকের ভাব) এখানে পুরোপুরি আসেনি। তবুও উভয়ের মূল সুর—অর্থাৎ দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি অকৃত্রিম টান—একই সূত্রে গাঁথা।
৬. সৃজনশীল প্রশ্ন-২ (দেশপ্রেম ও সনেটের গঠন)
“ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।”
- ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত মহাকাব্যের নাম কী?
- খ. ‘আর কি হে হবে দেখা?’— কবির মনে এই সংশয় কেন জেগেছে?
- গ. উদ্দীপকের গানের চরণের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন বিশেষ দিকটির মিল রয়েছে? বর্ণনা করো।
- ঘ. “উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা— উভয় রচনার প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও চেতনার রঙ এক।”— উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।
✅ সৃজনশীল প্রশ্ন-২ এর বিস্তারিত উত্তর
মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত মহাকাব্যের নাম— ‘মেঘনাদবধ কাব্য’।
প্রবাস জীবনে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্বদেশ থেকে বহুদূরে অবস্থান করছিলেন বলে তাঁর মনে সংশয় জেগেছে যে, তিনি হয়তো আর জীবনে কখনো স্বদেশের মাটিতে ফিরে কপোতাক্ষ নদের দেখা পাবেন না।
কবি তখন ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে বসবাস করছিলেন। সেখান থেকে স্বদেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল খুবই ক্ষীণ। জীবনের নানা টানাপড়েন এবং বাস্তবতার কারণে তিনি আশঙ্কা করছিলেন, শৈশবের সেই প্রিয় নদকে হয়তো আর চোখের দেখা দেখা হবে না। এই গভীর বেদনা ও অনিশ্চয়তা থেকেই কবির মনে প্রশ্ন জেগেছে— “আর কি হে হবে দেখা?”
উদ্দীপকের গানের চরণের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার জন্মভূমির শ্রেষ্ঠত্ব বিচার ও গভীর দেশপ্রেমের দিকটির মিল রয়েছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বহু দেশ ভ্রমণ করার পরেও জন্মভূমিকেই শ্রেষ্ঠ মনে করেছেন। তিনি অনেক নদ-নদী দেখলেও কপোতাক্ষ নদের জলকে ‘দুগ্ধ-স্রোতোরূপী’ বা মায়ের দুধের সাথে তুলনা করেছেন। মায়ের দুধ যেমন শিশুর কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানীয়, তেমনি কবির কাছে কপোতাক্ষ নদ তথা জন্মভূমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্থান।
উদ্দীপকেও ঠিক একই ভাব প্রকাশ পেয়েছে। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের এই গানে বলা হয়েছে, পৃথিবী ধন-ধান্যে ও পুষ্পে ভরা হলেও আমাদের জন্মভূমিই ‘সকল দেশের সেরা’। এই দেশটি স্বপ্ন ও স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এবং এমন দেশ পৃথিবীর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
কবিতায় কবি যেমন বলেছেন, “কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?”— অর্থাৎ অন্য কোথাও তিনি শান্তি পান না, তেমনি উদ্দীপকেও বলা হয়েছে, “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি”। তাই উভয় স্থানেই জন্মভূমির প্রতি অকৃত্রিম গর্ব ও ভালোবাসার দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
“উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা— উভয় রচনার প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও চেতনার রঙ এক।”— উক্তিটি সম্পূর্ণ যথার্থ।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি রচিত হয়েছে প্রবাস জীবনের প্রেক্ষাপটে। কবি সুদূর ফ্রান্সে বসে স্মৃতিকাতর হয়ে কবিতাটি লিখেছেন। তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে হারানোর বেদনা, ফিরে পাওয়ার আকুতি এবং দূর থেকে জন্মভূমিকে স্মরণ করার করুণ সুর। এটি মূলত ব্যক্তিগত বিচ্ছেদ-বেদনা থেকে উৎসারিত দেশপ্রেম।
অন্যদিকে, উদ্দীপকের গানটি রচিত হয়েছে বাংলার শাশ্বত রূপ ও ঐশ্বর্য বর্ণনার প্রেক্ষাপটে। এখানে কোনো বিচ্ছেদ বা প্রবাস জীবনের হাহাকার নেই, বরং আছে জন্মভূমির সৌন্দর্যের অহংকার এবং তাকে ‘সকল দেশের সেরা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয়। এটি একটি সার্বজনীন দেশাত্মবোধক গান।
কিন্তু প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও উভয় রচনার ‘চেতনার রঙ’ বা মূল আত্মা হলো— দেশপ্রেম। উদ্দীপকের কবি যেমন দেশকে ‘সকল দেশের রাণী’ বলেছেন, তেমনি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবিও নদের জলকে মায়ের দুধের সাথে তুলনা করে দেশকে মায়ের আসনে বসিয়েছেন। উভয় রচনারই লক্ষ্য হলো মাতৃভূমির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলা এবং এটা প্রমাণ করা যে, জন্মভূমির কোনো বিকল্প নেই।
সুতরাং বলা যায়, প্রকাশভঙ্গি ও পরিবেশ ভিন্ন হলেও উদ্দীপক এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অন্তনিহিত চেতনা একই বিন্দুতে মিলিত হয়েছে—আর তা হলো নিটোল ও নিখাদ দেশপ্রেম।
৭. সেরা ২০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর (MCQ)
খ) জসীমউদ্দীন
গ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
ঘ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
খ) কলকাতায়
গ) ইতালিতে
ঘ) ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে
খ) অষ্টক
গ) যতি
ঘ) অন্তরা
খ) শিশির বিন্দু
গ) মায়ের স্তন্যদুগ্ধ
ঘ) সাগরের জল
খ) সর্বদা
গ) সাদা
ঘ) সততা
খ) ভাবের পরিণতি
গ) ছন্দের পতন
ঘ) কাহিনির শুরু
খ) মায়ের ডাক
গ) নদের কলকল ধ্বনি
ঘ) বাতাসের শব্দ
খ) ১২টি
গ) ১৪টি
ঘ) ১৮টি
খ) বঙ্গবাসীর কাছে
গ) কপোতাক্ষ নদের কাছে
ঘ) প্রকৃতির কাছে
খ) ঝর্ণা
গ) বৃষ্টি
ঘ) মেঘ
খ) জনাকীর্ণ স্থানে
গ) একান্ত নির্জনে
ঘ) বিদেশি মাটিতে
খ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
গ) বিহারীলাল চক্রবর্তী
ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খ) সাগরকে
গ) পাঠককে
ঘ) নদকে
খ) গভীর মমত্ববোধ ও দেশপ্রেম
গ) জলের অভাব
ঘ) নদীর সৌন্দর্য
খ) মেঘনাদবধ কাব্য
গ) কৃষ্ণকুমারী
ঘ) পদ্মাবতী
খ) আনন্দ
গ) সংশয় বা সন্দেহ
ঘ) বিরক্তি
খ) নিজের পরিবারকে
গ) বন্ধুদের
ঘ) নদের স্রোতকে
খ) কাজী নজরুল ইসলাম
গ) জীবনানন্দ দাশ
ঘ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
খ) কপোতাক্ষ নদ ও জন্মভূমিকে
গ) ফরাসি সাহিত্যকে
ঘ) ইংরেজি ভাষাকে
খ) ১৮২৪ সালে
গ) ১৮৪৩ সালে
ঘ) ১৮৬০ সালে
