ঐতিহাসিক যুগে পদার্পণ
- ঐতিহাসিক যুগে পদার্পণ
- নগর বিপ্লব
- সভ্যতা বিকাশে নদী ও সম্পদ
- মিশরের আদি কৃষিজীবী সমাজ
- প্রাক-রাজবংশীয় যুগ
- রাজবংশীয় যুগ
- সমাজজীবন
- মিশরীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক
- মিশরীয় সাহিত্য ও শিল্প
- মিশরীয় বিজ্ঞান
ঐতিহাসিক যুগে পদার্পণ
খ্রিস্টের জন্মের পঞ্চাশ হাজার বৎসর পূর্ব থেকে মানুষ সাড়ম্বরে পৃথিবীতে বিচরণ শুরু করলেও (পুরোপলীয় যুগ থেকে শুরু করে) খ্রিস্টপূর্ব পাঁচ হাজার বৎসর পর্যন্ত তারা কোনো লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন করতে পারে নি। এ সময়ের ইতিহাস জানতে আমরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের (মানুষের ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, অস্ত্র, ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি) উপর নির্ভর করে থাকি।
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মাধ্যমে আমরা শুধুমাত্র মানুষের বস্তুগত বা দৈহিক কার্যাবলি সম্পর্কেই ধারণা পেতে পারি। কিন্তু মানুষের পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনার মতো অবস্তুগত বিষয়াবলি জানার সুযোগ সেখানে নেই। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, ঐতিহ্য এবং সামাজিক প্রথা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা দিতে পারে না। এ কারণেই আমরা খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০০ অব্দ থেকে শুরু করে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ পর্যন্ত মানবগোষ্ঠীর সামগ্রিক জীবনধারা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাই না। বৈজ্ঞানিকভাবে ইতিহাস উপস্থাপন করতে তাই লিখিত প্রমাণের প্রয়োজন হয়। ইতিহাসের বিচারে যে সময়ে মানুষ লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন ও নগরায়নের মাধ্যমে নতুন পর্যায়ে যাত্রা শুরু করে, তখনই তারা পদার্পণ করেছিল প্রাগৈতিহাসিক যুগের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক যুগে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি আমরা প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের পাশাপাশি লিখিত প্রমাণ দেখে পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনায় প্রয়াসী হতে পারছি। মিশরের নীলনদ, মেসোপটেমিয়ায় টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদী, ভারতে সিন্ধু নদী এবং চীনে হোয়াংহো ও ইয়াংজেকিয়াং নদী তাদের উপত্যকায় উর্বর ভূখণ্ড গড়ে তুলেছিল, আর সেখানে গড়ে উঠেছিল ঐশ্বর্যশালী নগর সভ্যতা। মিশর, মেসোপটেমিয়া, ভারত, চীন প্রভৃতি অঞ্চলের নবোপলীয়-মানবগোষ্ঠী খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ সমস্ত উর্বর ভূখণ্ডে এসে বসতি গড়ে তোলে। এভাবেই গড়ে ওঠে প্রাচীন সভ্যতাসমূহ।