নতুন মন্ত্রিসভার ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীর তালিকা - List of 25 ministers and 11 state ministers of the new cabinet

Mohammad Rashed
0

নতুন পূর্ণমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের তালিকা

নতুন মন্ত্রিসভার ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীর তালিকা - List of 25 ministers and 11 state ministers of the new cabinet

অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করা পাঁচজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখেননি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় এসে পুরনোর সঙ্গে একঝাঁক নতুন মুখ মিলিয়ে নতুন সূচনা করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়েও ভোটের আগে ইশতেহারে সমৃদ্ধ আগামীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। ভোটে জয়ের পর তার নতুন মন্ত্রিসভায় মিলছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের আভাস।

বিদায়ী সরকারে থাকা প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের অনেকের জায়গা হয়নি নতুন মন্ত্রিসভায়। গতবারের মত এবারও শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভার সবাই আওয়ামী লীগের, শরিক দলের কাউকে তিনি ফেরাননি।

প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী। আর ১১ জন পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

নতুন সরকারের অর্ধেকের বেশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী প্রথমবারের মত সরকারের দায়িত্ব পালন করতে আসছেন। বিদায়ী সরকারে থাকা ১৫ মন্ত্রী এবং ১৩ প্রতিমন্ত্রী এবং দুই জন উপমন্ত্রীর নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি।

নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি তারা: (প্রথম সারি)  এ কে আব্দুল মোমেন, আ হ ম মুস্তফা কামাল, আব্দুর রাজ্জাক, এম এ মান্নান; (দ্বিতীয় সারি) গোলাম দস্তগীর গাজী, জাহিদ মালেক, মোস্তাফা জব্বার, শ ম রেজাউল করিম; (তৃতীয় সারি) টিপু মুনশি, নুরুল ইসলাম সুজন, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নুরুজ্জামান আহমেদ; (চতুর্থ সারি) শাহরিয়ার আলম, জাহিদ আহসান রাসেল, এনামুর রহমান এবং কে এম খালিদ।

গত পাঁচ বছর দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন না।

বাদ পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর বাহাদুর উশৈ সিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেল মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদও।

এই তালিকা বলছে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করা পাঁচজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখেননি শেখ হাসিনা। বিষয়টিকে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থানা ঢেলে সাজানোর ইংগিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বয়স আর অসুস্থতার কারণে গত দুবার বাজেট দেওয়ার সময় যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে। তার দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। গুঞ্জন ছিল, কামালের দায়িত্ব এবার মান্নানের ওপর বর্তাতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, দুজনের কেউই থাকছেন না।

শেখ হাসিনার গত সরকারে অনির্বাচিত (টেকনোক্র্যাট) মন্ত্রী ছিলেন দুজন, তাদের মধ্যে একজনকে এবারও সরকারে রাখা হয়েছে। এর বাইরে টেকনোক্র্যাট হিসেবে মন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছেন আরো একজন। বাদ পড়েছেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
গত সরকারের প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা থাকছেন না নতুন সরকারে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবার জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। ফলে তাদের না থাকা অনুমিতই ছিল।

মনোনয়ন পেয়েও ভোটে হেরে যাওয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. স্বপন ভট্টাচার্য্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও ডাক পাননি।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমও ডাক পাননি এবার।

উপরে বাঁ থেকে আব্দুস শহীদ, উবায়দুল মোকতাদির, আব্দুর রহমান, নাজমুল হাসান, আব্দুস সালাম, জিল্লুল হাকিম ও সামন্তলাল সেন প্রথমবার মন্ত্রিসভায় আসছেন
নতুন সরকারের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে ১৪ জন একেবারে নতুন। বিদায়ী সরকারে না থাকলেও আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন এমন পাঁচজনকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে এনেছেন পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে। এছাড়া গত সরকারের একজন উপমন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী এবার পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হয়েছেন।

২০১৩-২০১৮ মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে আবার মন্ত্রিসভায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা। ডাক পড়েছে ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে বাণিজ্য এবং বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ফারুক খানেরও।

সাবের হোসেন চৌধুরী সেই ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে এলজিআরডি ও নৌ পরিবহন উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। গত তিন মেয়াদে তাকে সরকারে দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন পর তিনি ফিরছেন পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছে।

২০০৯-২০১৪ মেয়াদে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা জাহাঙ্গীর কবির নানক পরের মেয়াদে সরকারে ঠাঁই পাননি। তবে এবার তাকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনছেন শেখ হাসিনা। একইভাবে ফিরছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। 

গত এক যুগ ধরে বিসিবির সভাপতি পদে থাকা নাজমুল হাসান পাপনকে এবারই প্রথম মন্ত্রিসভায় এনেছেন শেখ হাসিনা। আর পোড়া রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিচিত নাম অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেনকে টেকনোক্র্যাট হিসেবে পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন। 

এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, সাবেক চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, শেখ হাসিনার এক সময়ের একান্ত সচিব র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ময়মনসিংহের এমপি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম, রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জিল্লুল হাকিম প্রথমবার সরকারে আসছেন মন্ত্রী হয়ে।

প্রথমবার মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পাওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রহমান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবশ্যই অবশ্যই আমার দায়িত্ববোধ বেড়ে গেল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা এবং উনার যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমি তার পাশে থেকে কাজ করব সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে।”

গত পাঁচ বছর শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা তরুণ নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে পূর্ণমন্ত্রী করছেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্ত্রিসভায় ফিরছেন বা থেকে আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ফারুক খান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবের হোসেন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। উপমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

নতুন প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন তাজ উদ্দিন আহমেদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি, ২০২৩ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য হওয়া মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং পটুয়াখালীর আওয়ামী লীগ নেতা মুহিব্বুর রহমান মুহিব।


খাগড়াছড়ির টানা তিনবারের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রহমত আলীর মেয়ে রুমানা আলী টুসি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটুকেও প্রতিমন্ত্রী করে সরকারের দায়িত্বে এনেছেন শেখ হাসিনা।


একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় তিন জন উপমন্ত্রী থাকলেও এবার কাউকে উপমন্ত্রী রাখা হয়নি।


মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।


তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের শপথ নেবেন নতুন সরকারের সদস্যরা। কে কোন মন্ত্রণালয় পাবেন, তা জানা যাবে দপ্তর বণ্টনের পর।


 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


  • পূর্ণমন্ত্রী যারা


আ ক ম মোজাম্মেল হক

ওবায়দুল কাদের

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন

আসাদুজ্জামান খান কামাল

দীপু মনি

তাজুল ইসলাম

ফারুক খান

আবুল হাসান মাহমুদ আলী

আনিসুল হক

হাছান মাহমুদ

আবদুস শহীদ

সাধনচন্দ্র মজুমদার

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

আব্দুর রহমান

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ

আব্দুস সালাম

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

ফরহাদ হোসেন

ফরিদুল হক খান

জিল্লুল হাকিম

সাবের হোসেন চৌধুরী

জাহাঙ্গীর কবির নানক

নাজমুল হাসান পাপন

  • টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী

ইয়াফেস ওসমান

সামন্তলাল সেন

  • প্রতিমন্ত্রী ১১ জন


সিমিনি হোসেন রিমি

নসরুল হামিদ

জুনাইদ আহমেদ পলক

মোহাম্মদ আলী আরাফাত

মহিবুর রহমান

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

জাহিদ ফারুক

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা

রুমানা আলী

শফিকুর রহমান চৌধুরী

আহসানুল ইসলাম টিটো

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!