৯ম অধ্যায় - প্রাকৃতিক ও সামাজিক কাঠামো
■ দলে ভাগ হয়ে একেক দল কয়েকটি করে ছবি নিয়ে বসে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখ ।
সমাধান নির্দেশনা : দলে ভাগ হয়ে একেক দল কয়েকটি করে ছবি নিয়ে বসে গেলাম। নিচের প্রশ্নগুলো নিয়ে আমরা অনেক চিন্তা করলাম আর উত্তর গুলো লিখলাম :
ক্রম |
প্রশ্ন |
উত্তর |
১. |
ঘর-বাড়ি/দালান-কোঠাগুলোর আকার/আকৃতি দেখতে কেমন? |
ঘর-বাড়িগুলোর আকার আকৃতি দেখতে বিভিন্ন রকমের। কোনোটি দেখতে গোলাকার, কোনোটি দেখতে ত্রিকোণাকৃতি, কোনোটি স্বচ্ছ আবার কোনোটি গুহার মতো, কোনোটি আবার প্যাগোডার দেখতে। এদের ভিন্ন নামও আছে। যেমন- ইগলু, মাচাঘর, গ্রিনহা জেলখানা, মন্দির, প্যাগোডা, গুহা, অ্যাপার্টমেন্ট, তাঁবু ইত্যাদি । |
২. |
কী দিয়ে তৈরি করা হয়? |
ভিন্ন ভিন্ন ঘর ভিন্ন ভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়। যেমন- ইগলু— বরফ দিয়ে তৈরি মাচাঘর- সাধারণত । ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। গ্রিনহাউজ-
কাচ দিয়ে তৈরি ঘর । জেলখানা— লোহা, রড, সিমেন্ট, ইট দ্বারা তৈরি । পুরাতন মন্দির— মাটি, খড়, ভুসি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। টিনের ঘর— টিন দ্বারা তৈরি। গৃহা- পাহাড় কেটে বা পাহাড়ের খাদে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি । জাপানী প্যাগোডা- টিন, কাঠ দিয়ে তৈরি। আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট— ইট, বালি, সিমেন্ট, রড, স্টিল, গ্লাস ইত্যাদি দিয়ে তৈরি । তাঁবু- কাপড়, ত্রিপল এবং লোহার শিক। |
৩. |
কী কাজে ব্যবহার করা হয়? |
ইগলু- বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। মাচাঘর- বসবাস করার জন্য। গ্রিনহাউজ—
শীত প্রধান দেশগুলোতে গাছগাছালি ও শাকসবজি উৎপাদন করার জন্য । জেলখানা— অপরাধীদের রাখার জন্য। পুরাতন মন্দির ও প্যাগোডা- প্রার্থনা করার জন্য । অ্যাপার্টমেন্ট— আধুনিক সুবিধাদিসম্পন্ন ঘর বসবাসের জন্য । তাঁবু- বনজঙ্গলে বা পাহাড়-পর্বতের পর্যটকরা থাকার জন্য ব্যবহার করে । |
8. |
আবহাওয়া/পরিবেশের সঙ্গে এগুলোর গঠনের কোনো সম্পর্ক আছে কি? থাকলে কী ধরনের সম্পর্ক রয়েছে? |
হ্যাঁ, আবহাওয়া বা পরিবেশের সঙ্গে এগুলোর গঠনের সম্পর্ক আছে। যেমন- ইগলু ব্যবহার করা হয় বরফ আচ্ছাদিত পরিবেশে বসবাসের জন্য। মাচা ঘরগুলো তৈরি করা হয় অসমতল পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসের জন্য। শীত প্রধান দেশগুলোতে সুষ্ঠুভাবে শাক-সবজি, ফলমূল এবং গাছপালা উৎপাদন করার জন্য গ্রিনহাউজ | তৈরি করা হয়। অ্যাপার্টমেন্ট হলো আধুনিক সভ্যতার আরাম আয়েশের বসবাসের জন্য তৈরি করা হয়। |
৫. |
কী কাজে ব্যবহার করা হয় সে অনুযায়ী ঘর-বাড়ি/দালান-কোঠাগুলোর গঠনে পার্থক্য রয়েছে কি? থাকলে কী ধরনের পার্থক্য রয়েছে? |
হ্যাঁ, কাজে ব্যবহারের ভিন্নতার কারণেও ঘরবাড়িগুলোর গঠনে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। যেমন— মন্দির বা প্যাগোডাগুলো ধর্মীয় প্রার্থনার কাজে ব্যবহৃত হয়। | পর্যটকরা রাত্রি যাপন কিংবা বিশ্রামের জন্য তাঁবু ব্যবহার করে। |
প্রশ্ন |
• এসব
ভৌগোলিক অবস্থানের নাম জানো কি? • এদের
মধ্যে কি কোন মিল/অমিল খুঁজে পাচ্ছ? • কী
কী মিল/অমিল দেখতে পাচ্ছ? • এছাড়াও
আর কোনো রকম ভূমিরূপের নাম জানো? |
উত্তরঃ |
• এসব
ভৌগোলিক অবস্থানের নাম জানো কি? উত্তর : এসব ভৌগোলিক অবস্থানের নাম জানি। যেমন- পার্বত্য অঞ্চল, মরুভূমি অঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল, বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চল, সমভূমি অঞ্চল, নদী অঞ্চল, বনাঞ্চল। • এদের মধ্যে কি কোন মিল/অমিল খুঁজে পাচ্ছ? উত্তর : এদের মধ্যে অনেক অমিল রয়েছে। যেমন- পার্বত্য অঞ্চলে সুউচ্চ পর্বত শ্রেণি বিদ্যমান থাকে। মরুভূমি অঞ্চল বালুকাময়। পাহাড়ি অঞ্চলে ছোট বড় অনেক পাহাড় বা টিলা দেখা যায়। বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলে বরফ ঢাকা থাকে সারা বছর। সমভূমি অঞ্চলে মানব বসতি এবং ফসল চাষাবাদ করতে দেখা যায়। নদ শিল্পকারখানাগুলো গড়ে ওঠে। আর বনাঞ্চল বৃক্ষরাজিতে এবং পশুপাখি দ্বারা পরিপূর্ণ। নদীবেষ্টিত অঞ্চলে বেশিরভাগ • কী কী মিল/অমিল দেখতে পাচ্ছ? উত্তর : ছবিগুলোর মাঝে ভূপ্রকৃতিগত ও কাঠামোগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। • এছাড়াও আর কোনো রকম ভূমিরূপের নাম জানো? উত্তর : এছাড়া আরো অনেক ভূমিরূপ রয়েছে। যেমন- মালভূমি, তৃণভূমি ইত্যাদি । |
■ চলো আমরা ওদের মতো করে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজে বের করে একটি অভিধান বানাই।
আমার ভূমিরূপের অভিধান
■ প্রত্যেক দল একটা করে বিভাগের ভূপ্রকৃতির বৈশিষ্ট্য মানচিত্রে রং এর মাধ্যমে চিহ্নিত করলো এবং সেখানকার প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর তালিকা তৈরি করলো যার সাথে ভূমিরূপেরও সম্পর্ক আছে।
ক্রম |
ভূমিকা |
প্রাকৃতিক দূর্যোগ |
১. |
পাহাড় |
ভূমিধ্বস,
পাহাড়ধ্বস, পানিসংকট |
২. |
হাওড়
অঞ্চল |
বন্যা,
জলাবদ্ধতা |
৩. |
সমতল
ভূমি |
বন্যা,
খরা |
8. |
নদী
অঞ্চল |
বন্যা |
৫. |
বন
অঞ্চল |
ঝড় |
৬. |
দ্বীপ |
বন্যা,
জলোচ্ছ্বাস |
■ চলো ওদের মতো করে আমরাও একটা শিক্ষাভ্রমণের আয়োজন করি।
সমাধান নির্দেশিকা :
চলো যাই শিক্ষাভ্রমণে:
স্থান নির্বাচন |
দিন, তারিখ, সময় |
যানবাহন |
শিক্ষকমন্ডলী |
খাবার |
ফি |
১. ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ২. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ৩. সেন্টমার্টিন দ্বীপ |
২৫ ফেব্রুয়ারি |
ৰাস, জাহাজ |
১. মিজানুর রহমান সহকারী শিক্ষক ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ২. রাফিয়া আফরিন সহকারী শিক্ষক জীবন ও জীবিকা ৩. আয়েশা সিদ্দিকা সহকারি শিক্ষক ডিজিটাল প্রযুক্তি |
সকাল : রুটি, কেক, আপেল, কলা ও পানি দুপুর : প্যাকেটকৃত মোরগপোলাও, সফট ড্রিংকস, পানি, ডিম রাত : বার্গার, স্যান্ডউইচ, কমলা, কলা, পানি |
প্ৰতিজন ১,০০০ টাকা |
■ নিচের ছক ব্যবহার করে ধর্মগোলা গল্পে সমাজের কী কী প্রতিষ্ঠান ও আইন-কানুনের কথা বলা হয়েছে তা খুঁজে বের করি।
সমাধান নির্দেশিকাঃ
ক্রম |
কাজ/ভূমিকার নাম |
সমাজের প্রতিষ্টান বা মূল্যবোধ-রীতিনীতির
নাম |
১. |
গ্রামের
মানুষকে একতাবদ্ধ হতে কী সহায়তা করেছিলো? |
সমাজের
নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি, পরোপকারের সংস্কৃতি |
২. |
বন্যার
সময় মানুষ কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলো? |
পাকা
স্কুলের দালানে |
৩. |
ত্রাণ
সামগ্রী কার কাছ থেকে এসেছিলো? |
সরকারিভাবে
এবং এনজিও থেকে |
8. |
ত্রাণ
সামগ্রী কে বিতরণে তৎপর ছিলো? |
ইউনিয়ন
পরিষদ |
৫. |
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ কে করে? |
সদর
পুলিশ |
৬. |
পড়ালেখার
ক্ষতি কার তৎপরতায় খানিকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছিল? |
শিক্ষা
বিভাগ |
৭. |
গ্রামে
কী টিকে ছিল? |
ঐতিহ্যবাহী
সমাজব্যবস্থা |
৮. |
ধর্মগোলা কারা মিলে তৈরি করেছিলো? |
গ্রামের সব মানুষ মিলে |
■ উপরের ছকটি ব্যবহার করে ধর্মগোলা গজে উল্লিখিত বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ চিহ্নিত করি।
ধর্মগোলা গল্পে উল্লিখিত বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সংস্কৃতিক ও মূল্যবোধঃ
সামাজিক প্রতিষ্ঠান |
সংস্কৃতি |
মূল্যবোধ |
•
সরকার • এনজিও • পুলিশ প্রশাসন • ইউনিয়ন পরিষদ • শিক্ষা বিভাগ • সমাজ • বিদ্যালয় |
•
কৃষি ভিত্তিক গ্রাম • সামাজিক রীতিনীতির ধারক • ঐতিহ্যবাহী সমাজ ব্যবস্থা • শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের প্রতি সহানুভূতি |
•
একতা • পারস্পরিক বিশ্বাস • পরোপকার • পারস্পরিক সহযোগিতা • পরমতসহিষ্ণুতা |
■ আমরা প্রত্যেকে নিজের এলাকার সমাজ থেকে কোনো একটি সম্মিলিত উদ্যোগ বা এরকম একটি বিষয় চিহ্নিত করি। তারপর সেই উদ্যোগ বা বিষয় থেকে মানুষে-মানুষে, মানুষে-প্রতিষ্ঠানে, প্রতিষ্ঠানে-প্রতিষ্ঠানে মিথস্ক্রিয়ার অনুসন্ধান করি। আমরা নিচের ছকটিতে সেই মিথস্ক্রিয়ার বর্ণনা লিখব :
সমাধান নির্দেশিকা :
প্রত্যন্ত
অঞ্চলের একটি গ্রাম পুষ্পনগর গ্রামের মানুষরা সহজ সরল প্রকৃতির। আমি এই গ্রামেই ছোট
থেকে বড় হয়েছি। গ্রামে হাজার খানেক মানুষ ছিল কিন্তু ছিল না কোনো স্কুল। গ্রামের
সব মানুষ ঠিক করল সকলে মিলে স্কুল বানাবে। গ্রামের দুই তিনজন মিলে জমি দান করলেন।
সবাই সাধ্যমতো টাকা পয়সা দিয়ে স্কুল দাড় করানোর জন্য টাকা চাঁদা তুলল। সকলে সাহায্য
করল। যারা দিতে পারল না তারা কায়িক শ্রম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল। গ্রামের রাজমিস্ত্রির
কাজ জানা লোকগুলো কাজ শুরু করল। কাজ শুরুর কিছুদিন পর ফান্ড ফুরিয়ে আসল। সকলে মিলে
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য স্কুল কমিটি গঠন করল।
কমিটি চেয়ারম্যানের সাথে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করলে তিনি তাদের উদ্যোগকে
স্বাগত জানালো। তিনি থানা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলেন। থানা শিক্ষা অফিসার
জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে স্কুলের জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করল। অনেক স্বেচ্ছাসেবী
প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসল। এক বছরের মধ্যে পুষ্পনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পেল।
গ্রামের শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা শিক্ষক শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন শুরু করল। তাদের সম্মানী
এবং স্কুলের প্রয়োজনীয় খরচ মেটানোর জন্য স্কুল কমিটি একটি সমিতি গঠন করল। গ্রামের
মানুষজন প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিতে শুরু করল। সেখানে আসতে শুরু করল সরকারি
সাহায্যও। এভাবে পুষ্পনগর গ্রামের ছেলেমেয়েরা আজ শিক্ষার আলোয় আলোকিত। |
■অনুসন্ধানের প্রশ্ন-১ঃ প্রাচীন সভ্যতাগুলোর সংস্কৃতি কেমন ছিল? সেই সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো কেমন ছিল?
উত্তরঃ
সভ্যতা |
স্থান |
সময়কাল |
সাংস্কৃতিক উপাদান
বা চর্চা |
আদি মানুষের জীবনে
এর প্রভাব |
মিসরীয় সভ্যতা |
মিসর |
খ্রিষ্টপূর্ব
৩১৫০ অব্দ |
মিসরীয় সভ্যতার সংস্কৃতির মূল | নিদর্শন হলো সুবিশাল পিরামিড। এই সভ্যতার অন্য একটি নিদর্শন হলো হায়ারোগ্লিফিক লিপি। |
সমাজ কাঠামোর সূচনা হয়। মানুষজন সহজেই লিখে তাদের মনোভাব অন্যজনের কাছে প্রকাশ করতে পারত। |
সিন্ধু সভ্যতা |
ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চল |
২৬০০-১৯০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ |
পরিমাপ তির উদ্ভাবন এ সভ্যতার অনন্য অবদান। এ সভ্যতায় চাকার সাহায্যে মৃৎশিল্প তৈরির প্রচলন হয়েছিল। |
নগরবাসীর মাঝে ব্যবসায়ের চিন্তা জাগ্রত হয় সঠিকভাবে 1 সুদৃশ্য মাটির পাত্র ব্যবহার শেখে তারা। |
গ্রিক সভ্যতা |
গ্রিস |
3000-1100 খ্রিষ্ট
পূর্বাব্দ |
নগর রাষ্ট্র গড়ে উঠে এই সভ্যতায়। প্রথম গণতন্ত্রের সৃ চনা। পৃথিবীর মানচিত্র অঙ্কন করেন। |
রাষ্ট্রব্যবস্থার
জনগণ নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে শুরু করে। পৃথিবীর মানচিত্র তাদের জ্ঞান বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে । |
■ অনুসন্ধানের প্রশ্ন-২: পৃথিবীর যেসব দেশে বা স্থানে প্রাচীন সভ্যতাগুলো গড়ে উঠেছিল, সেসব স্থানে বর্তমানকালে মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদানগুলো কেমন?
উত্তর :
পৃথিবীর যেসব দেশে বা স্থানে প্রাচীন সভ্যতাগুলো গড়ে উঠেছিল সেসব স্থানে বর্তমান কালে মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদান :
মিসরীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল মিসরে। মিসরের বর্তমান কালে মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদান :
• বর্তমান মিসর একটি আরব রাষ্ট্র।
• বর্তমান মিসর পূর্ববর্তী খ্রিষ্টিয় ধর্ম ও সংস্কৃতি থেকে ইসলামি সংস্কৃতির ধারক।
• সুয়েজ খালের অবদানে এখানে সামুদ্রিক বন্দর গড়ে ওঠে।
• শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
• দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার কারণে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব ক্রমবর্ধমান।
• এটি ইসলামি বিশ্বের একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গণ্য হয়।
• পিরামিড এবং প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের জন্য এটি বিশ্বের অন্যতম দর্শনীয় স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র।
গ্রীক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল গ্রিসে। গ্রীসে বর্তমান কালের মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদান :
১. গ্রীসের পশ্চিম উপকূলে ৬টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দ্বীপপুঞ্জে উচ্চস্তরের বৃষ্টিপাতের ফলে এটি ফল ফুলে সুশোভিত।
২. অলিম্পিক গেইমসের সূচনাকারী ও আয়োজক।
৩. গ্রীসের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হলো পর্যটন ও বণিক পরিবহন।
৪. সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত সামুদ্রিক বন্দর ও পরিবহনের জন্য বিখ্যাত।
৫. খ্রিষ্টান ধর্মীয় সম্প্রদায় অধ্যূষিত গ্রীস।
৬. শিক্ষা ও সভ্যতার পীঠস্থান গ্রীস।
৭. শিল্প, সাহিত্য ও নাটক প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নত।
৮. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সুতিকাগার।
রোমান সভ্যতা গড়ে উঠেছিল ইতালির রোমে। রোমের বর্তমান কালের মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদানঃ
১. রোমান সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্যতম দিক মানবতা ও রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণের জন্য খ্যাত।
২. স্বদেশি কাব্য ও মহাকাব্য রোমান সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান ।
৩. রোমান শিল্প সংস্কৃতিতে পেন্টিং উল্লেখযোগ্য।
৪. খেলাধুলায় বর্তমানে রোমানরা অগ্রণী।
৫. দ্যা লাস্ট সাপার বা অন্তিম ভোজ রোমান চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত ছবি ।
৬. মেকিয়াভেলির রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের নাটক ও রেনেসাঁর উষ্ণ।
৭. এটি পশ্চিম ইউরোপের একটি একীভূত প্রজাতান্ত্রিক সংসদীয় রাষ্ট্র।
৮. পশ্চিমা সভ্যতায় রোমান সাম্রাজ্য রাজনৈতিক কেন্দ্ৰস্থল।
৯. বর্তমান রোমান ভাষায় প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ লোক কথা বলে।
পারস্য উপসাগরের উত্তরে বর্তমানে যে দেশটির নাম ইরাক সেটিই একসময় মেসোপটেনি ছিল বলে ইতিহাসে বিখ্যাত। এই অঞ্চলের বর্তমান কালের মানুষের সংস্কৃতি ও তার উপাদান :
মেসোপটেমীয় সভ্যতা বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস বা দজলা ও ইউফ্রেটিস বা ফোরাত নদী দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল। অধুনা ইরাক, সিরিয়ার উত্তরাংশ, তুরস্কের উত্তরাংশ এবং ইরানের খুয়েস্তান প্রদেশের অঞ্চলগুলোই প্রাচীনকালে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত ছিল বলে মনে করা হয়।
১. ইরাকের রাজনীতি একটি ফেডারেল সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গ্রিক প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় পরিচালিত হয়।
২. ইরাকের মহিমা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় অনেকটাই ম্রিয়মাণ। ইরাক বর্তমানে দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামোতে অবস্থান করছে।
৩. বিভিন্ন অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ইরাকের অর্থনৈতিক ও জনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্দশা নেমে এসেছে।
৪. ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দুর্বল সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে বিশ্ব রাজনীতিতে দেশটির গুরুত্ব ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
৫. যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইরাকে পর্যটন শিল্প স্থবির। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী পড়লেও এতে পর্যটকদের জন্য অনেক আকর্ষণীয় স্থান আছে। সামারা শহর
৬. সামারার বিখ্যাত সর্পিলাকার মসজিদ মিনার। ইরাকে মার্কিন অবস্থান বিরোধীরা ২০০৭ সালে মিনারটিতে বোমা হামলা চালিয়ে ক্ষতিসাধন করেছে। শহরটিতে দুইজন শিয়া ইমামের মসজিদও আছে এবং সেগুলো শিয়া মুসলিমদের তীর্থস্থান।
৭. ইরাকের সরকারি ভাষা আরবি। ইরাকের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি জনগণের মাতৃভাষা আরবি। ইরাকে প্রচলিত আরবি ভাষার লিখিত রূপটি ধ্রুপদী বা চিরায়ত আরবি ভাষার একটি পরিবর্তিত রূপ। কিন্তু কথা বলার সময় ইরাকের লোকেরা আরবির বিভিন্ন কথ্য উপভাষা ব্যবহার করে। এদের মধ্যে মেসোপটেমীয় বা ইরাকি আরবি উপভাষাটিতে ১ কোটিরও বেশি লোক কথা বলে।
৮. সেমিটীয় আরবি ভাষার বাইরে ইরাকে বিভিন্ন ইরানীয় ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে কুর্দি ভাষা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। ইরাকের জনগণের প্রায় ২০% কুর্দি ভাষায় কথা বলে।
৯. ইরাকের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দেশটির ৯৫-৯৯% লোক মুসলিম ।
১০. ইরাকে শিয়া মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানসমূহ, যেমন: ইমাম আলী মসজিদ, ইমাম হোসেনের মাজার, আল-কাজিমিয়া মসজিদ, আল-আসকারী মসজিদ, মসজিদ আল-কুফা ইত্যাদি অবস্থিত।
১১. ইরাক ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ধারক। দেশটি তার কবি-সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও স্থাপত্যশিল্পীদের জন্য আরব বিশ্বের মধ্যে অন্যতম মর্যাদার অধিকারী, যাদের অনেকেই ছিল জগতখ্যাত।
■অনুসন্ধানের প্রশ্ন-৩ : বর্তমানকালের ও অতীতকালের মানুষের জীবনে সংস্কৃতিগত কী কী মিল অমিল দেখা যায়?
উত্তর :
বর্তমানকালের ও অতীতকালের মানুষের জীবনে সংস্কৃতিগত মিলগুলো হলো-
১. অতীতকালে মানুষ যেমন বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করত, বর্তমানেও মানুষ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে।
২. অতীতকালের মতো বর্তমানকালেও মানুষ তার নিজস্ব পারিবারিক সংস্কৃতি লালন করে।
৩. অতীতকালে যেমন একই গোত্রের মানুষের মধ্যে ভাষা, খাদ্য, পোশাক প্রভৃতি ক্ষেত্রে মিল ছিল বর্তমানেও একই দেশ বা অঞ্চলের মানুষের ভাষা, খাদ্য, পোশাক প্রভৃতি ক্ষেত্রে মিল রয়েছে।
৪. অতীতে মানুষকে যেমন সামাজিক রীতি-নীতি, আচার অনুষ্ঠান মেনে চলতে হতো তেমনি বর্তমানেও মানুষকে সামাজিক রীতি- নীতি, আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলতে হয় ।
৫. অতীতে সংস্কৃতি অনুসারে (যেমন- ভাষা, ধর্ম, বাচনভঙ্গি, আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদি অনুসারে) মানুষের পরিচয় বা গোত্র নির্ধারণ করা হতো। বর্তমানেও সংস্কৃতি অনুসারে মানুষের পরিচয় নির্ধারণ করা হয়। যেমন- বাংলা ভাষার লোকেরা বাঙালি হিসেবে পরিচিত।
■ বর্তমানকালের ও অতীতকালের মানুষের জীবনে সংস্কৃতিগত অমিলগুলো হলো-
১. অতীতকালে মানুষ যৌথ পরিবারে বসবাস করত। কিন্তু বর্তমানকালে গ্রাম ও শহর উভয়স্থানে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার গড়ে উঠেছে।
২. অতীতে মানুষ বিনোদনের চাহিদা পূরণ করত যাত্রা, পালাগান, সার্কাস, জারি-সারি ইত্যাদির মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে ঘরে বসে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে সে চাহিদা পুরণ করছে।
৩. অতীতকালে মানুষ বনে জঙ্গলে শিকার করে খাবার সংগ্রহ করত। কিন্তু বর্তমানে মানুষ খাবার উৎপাদন করে।
৪. বর্তমান মানুষের জীবনে ডিজিটাল সংস্কৃতির প্রভাব অনেক বেশি। যা অতীতকালের মানুষের জীবনে ছিল না।
৫. অতীতকালের সংস্কৃতি ছিল কৃষিভিত্তিক। কিন্তু বর্তমানের সংস্কৃতি হচ্ছে কৃষি ও শিল্পভিত্তিক