বিসিএস পরীক্ষার খুঁটিনাটি
00
- ফাজিল বা কামিল পাশ করে বিসিএস দেয়া যায় কি না?
- ফাজিল না, তবে কামিল পাশ করে বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়।
- মাদ্রাসা ছাত্রদের বিসিএস পরীক্ষায় কোনো বৈষম্য করা হয়?
- না। যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই বিসিএস উত্তীর্ণ হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। বরং অপ্রচলিত বা পিছিয়ে পড়া স্থান বা প্রতিষ্ঠান বা জনগোষ্ঠী থেকে বিসিএস ভাইভা দিতে যাওয়া প্রার্থীরা ভাইভা বোর্ডে বাহবা পেয়ে থাকে।
- বিসিএস সম্পূর্ন নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া?
অবশ্যই। শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার অফিসারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। যদি তা না হতো, তবে আমি মাদ্রাসা ছাত্র হয়ে শিক্ষা ক্যাডারে আমার বিষয় ইংরেজিতে প্রথম হতাম না। আরেক মাদ্রাসা ছাত্র কাস্টমস ক্যাডারে অষ্টম মেধাস্থান লাভ করেন।
- বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি যেভাবে নিয়েছি
- কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে প্রথমে সবকিছু দিশেহারা মনে হচ্ছিল। একদিন ম্যাথ মডেল টেস্টে খুব খারাপ করি। তখন খুব জেদ চেপে বসে। দুসপ্তাহ পরে আরেকটি পরীক্ষার জন্য দিন রাত খেটে পুরো ম্যাথ বই প্র্যাকটিস করেছি। ঐ টেস্টে সম্ভবত ৪র্থ হই। এরপর থেকে প্রতিটি বিষয়ে একটি কৌশলই প্রয়োগ করতাম। বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একবার পড়ে ফেলা। কিছু ভুলে গেলেও অধিকাংশ আইডিয়া মাথায় চলে আসে। ৮ম ও ৯ম শ্রেণির বিষয়গুলোর উপর যার দখল যত ভালো তার ব্যাসিক তত মজবুত হয়ে উঠে। এছাড়া একাধিক নোট, গাইড ও পত্রিকা পড়া আমি প্রেফার করি। ৩৮ বিসিএসের বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে আমার ১৪৩ নম্বর ছিল। ৩৫ বিসিএসের ইংরেজিতে ১৪৫ ছিল। এগুলোর অভিজ্ঞতা সম্ভবত এবার ৪১ বিসিএসে কাজে লেগেছে। কোন বিষয় কীভাবে পড়লে ভালো নম্বর তোলা যায়, সেটা আলাদা করে প্ল্যান করতে হবে। Descriptive লিখায় সঠিক রেফারেন্স To-the-point উত্তর, প্রাসঙ্গিক আলোচনা রাখা জরুরি।
- প্রিলি ও লিখিত প্রস্তুতি কি একসাথে নেব নাকি স্টেপ বাই স্টেপ?
- বাংলা, ইংরেজি ও ম্যাথের ব্যাসিক প্রস্তুতি একসাথে নিলে ভালো। বাকিগুলো স্টেপ বাই স্টেপ।
- বারবার লিখিত পরীক্ষায় খারাপ করার কারণ কী?
- বিষয়ভিত্তিক উত্তর দেওয়ার কৌশল ঠিক না করা। সিলেবাস সম্পর্কে ভালোভাবে স্টাডি না করা। অপ্রাসঙ্গিক লিখে খাতা পূর্ণ করা। বর্ণনামূলক লেখায় যথাযথ তথ্য-উপাত্ত, যুক্তি ও উদ্ধৃতি সংযোজনের মাধ্যমে উত্তরকে আকর্ষণীয় করে ভালো নম্বর তোলা যায়।
- বিসিএসে নতুনদের জন্য পরামর্শ
- বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের ব্যাসিক ঠিক না করে বিসিএস দিতে গেলে অবশ্যই হতাশ হতে হবে। বারবার প্রিলি আটকানোর এটা একটা কারণ। মাধ্যমিক স্তরের এই বিষয়গুলোর যাবতীয় বই ভালভাবে পড়ে নিলে ভালো হয়। স্নাতক পর্যায় থেকেই ব্যাসিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে, অন্যথায় প্রস্তুতি নিতে দেরি হয়ে যায়।
- লিখিত পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি
মাঝে মাঝে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং এর চর্চা করা অপরিহার্য। ম্যাথ ও বিজ্ঞান লিখিত পরীক্ষার পূর্বের প্রশ্নগুলো ভালমত স্টাডি করা।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা
এর ভূমিকা অনেক বেশি। YouTube থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংবাদ দেখতাম। বিবিসি আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে তথ্য সন্নিবেশ করা যায় লিখিত পরীক্ষায়। এছাড়া অনেক সফল ক্যাডারদের অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় পেয়ে উপকৃত হয়েছি। মার্চ ফরোয়ার্ডের কথা তো উল্লেখ করতেই হয়।
আরো কিছু জানার আছে?
বিস্তারিত জানতে হলে আমার ফেসবুক পেজ RH Murad Sir এ যোগাযোগ করার অনুরোধ রইল ।
লেখক:
১ম স্থান অধিকারী, ৪১তম বি.সি.এস (শিক্ষা)
প্রাক্তন শিক্ষার্থী,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা।