সপ্তম শ্রেণি (জীবন ও জীবিকা)
ধাপ-১: (প্রথম কর্মদিবস: ৯০ মিনিট)
(ক) দলগতভাবে সামাজিক সমস্যা খুঁজে সমাধান বের করা (৪০ মিনিট) |
কাজ-১: এলাকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা তৈরি করো (অন্তত ৩টি সমস্যার)।
উত্তর: এলাকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা নিম্নরূপ:
১। ধুমপান
২। অপরিচ্ছন্নতা
৩ । আর্সেনিক
৪। কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়
৫ । অপুষ্টিহীনতা
৬। ডেঙ্গু
কাজ-২: উক্ত সমস্যার কী ধরনের সমাধান হতে পারে, তা দলগত আলোচনার মাধ্যমে খুঁজে বের করতে বলুন।
উত্তর: ধুমপানরোধে সমাধানসমূহ:
১. পরিকল্পনা তৈরি করুন: প্রথমত, ধূমপান ত্যাগের জন্য স্বচ্ছ পরিকল্পনা থাকা চাই। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে একটি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করুন। মনে রাখবেন, এই তারিখ কোনোভাবেই আর পেছানো যাবে না। তারিখ বাছাইয়ের সময় এমনভাবে নিজেকে বোঝাবেন, যেন এটিই ধূমপান ত্যাগের জন্য শেষ তারিখ। ওই তারিখের পর ধূমপায়ী বন্ধুদের কোনো পার্টি থাকলেও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
২. তালিকা করুন: কেন ধূমপান ছাড়বেন, সেই তালিকা তৈরি করুন। অসংখ্য কারণ পাবেন ধূমপান ছাড়ার। চিন্তা করে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে একটি শক্ত তালিকা তৈরি করুন। তালিকায় আপনার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে আপনার আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ধূমপানের প্রভাব, আর্থিক অপচয় ইত্যাদি থাকা আবশ্যক। এরপর যখন ধূমপানের ইচ্ছা জাগবে, তখনই এসব কারণ ভাবতে শুরু করবেন। এতে আপনার ধূমপানের প্রতি আগ্রহ কমতে থাকবে।
৩. ইতিবাচক থাকুন: হয়তো এর আগেও আপনি ধূমপান ছাড়ার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এবারের পরিকল্পনাও যে সেগুলোর মতো সফলতার মুখ দেখবে না, এমন ভাবা যাবে না। বরং আপনার এবারের প্রচেষ্টা সফল হবেই—এমন আত্মবিশ্বাস রাখুন। আগেরবারের ভুলগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকে সাবধান থাকতে হবে।
৪. খাবারের ধরন পরিবর্তন: দুপুর কিংবা রাতের আহারের পর অনেকেই ধূমপান করতে ভালোবাসেন। আমেরিকান একটি গবেষণা বলছে, অনেকের কাছে মাংসজাতীয় খাবার খাওয়ার পর ধূমপান উপভোগ্য হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ফল কিংবা সবজিজাতীয় খাবারের পর ধূমপান কিছুটা স্বাদ হারায়। তাই ধূমপান ছেড়ে দিতে চাইলে কিছুদিন মাংস এড়িয়ে খাবারের তালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল রেখে দেখতে পারেন। আর খাওয়া শেষ করেই এমন স্থান বা কক্ষে চলে যান, যেখানে ধূমপানের সুযোগ নেই
৫. বদলে ফেলুন পানীয়: গবেষকেরা বলছেন, অ্যাকোহলমিশ্রিত পানীয়, কোমলপানীয়, চা, কফি ইত্যাদি পানের সময় অনেকে মনে করেন যোগ্য সংগত সিগারেট। যা পানীয়র স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এ ধরনের পানীয়র অভ্যাস প্রচুর ছেড়ে ফলের রস আর পানি পান করুন। এখন বাজার নানা রকম রসাল ফলে ভরপুর। সেসব ফলের জুস করে খেতে পারেন।
৬. ব্যস্ততা বাড়ান: দিনের কোন সময়গুলোতে আপনার ধূমপানের ইচ্ছা বেশি জাগে, সেটি শনাক্ত করুন। এরপর ওই সময়গুলোতে নিজেকে কোনো কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখুন। কোনো কাজ খুঁজে না পেলে হাঁটাহাঁটি করুন। ব্যায়াম করে বা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আড্ডা দিয়েও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। ব্যস্ততা বাড়লে ধূমপানের কথা ভুলে থাকা সহজ হবে।
৭. অধূমপায়ী বন্ধু বাড়ান: ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রে আপনার আশপাশের মানুষের ভূমিকা অপরিসীম। তাই যতটা সম্ভব ধূমপায়ী বন্ধুদের আড্ডা এড়িয়ে চলুন। অন্তত ধূমপান ছাড়ার পর প্রথম কয়েক দিন ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি আড্ডা থেকে বিরত থাকুন। একই সঙ্গে অধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
৮. মুখ খালি রাখবেন না: মুখ খালি থাকলেই ধূমপানের আগ্রহ জাগবে। তাই ধূমপান বাদ দিতে চাইলে মুখ খালি রাখা যাবে না। এ সময় মুখে চকলেট, লজেন্স বা চুইংগাম রাখুন। পকেট থেকে সিগারেট, ম্যাচের বাক্স ফেলে দিয়ে লজেন্স কিংবা চুইংগাম রাখুন।
৯. বড়দের পরামর্শ নিন: ধূমপান ছেড়েছেন, এমন কাউকে চেনা থাকলে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিন। তাঁর অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগান। ফেসবুকে একাধিক গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হয়। এসব গ্রুপে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ইতিবাচক ফল পাওয়া যেতে পারে।
আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আরো একটা সমস্যার সমাধান তুলে ধরা হলো:
কাজ-২: উক্ত সমস্যার কী ধরনের সমাধান হতে পারে, তা দলগত আলোচনার মাধ্যমে খুঁজে বের করতে বলুন।
উত্তর: আর্সেনিক সমস্যার সমাধানসমূহ:
১। জাতীয় প্রতিষ্ঠান বা প্রচার মাধ্যমে আর্সেনিক সমস্যার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রচারভিযান চালানো।
২। আর্সেনিক পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করে আর্সেনিক দূষণের সম্ভাব্য এলাকা চিহ্নিতকরণ ও পরীক্ষা করে জনগণকে সচেতন করা।
৩। পানিকে আর্সেনিক মুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি প্লান্ট স্থাপন ।
৪। গ্রামে গ্রামে বালি-শোধিত জলাধার সৃষ্টি করা ।
৫। আর্সেনিক কবলিত গ্রামে সমবায়ের মাধ্যমে আর্সেনিক দূষণমুক্ত নলকূপ বসিয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা।
৬। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করা।
কাজ-৩: সমস্যা সমাধানের ধাপ অনুসরণ করে সমস্যাটির সমাধান করার একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
উত্তর: আমাদের এলাকায় ধুমপান একটি বড় সমস্যা। তবে এ সমস্যাটি আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খুব সহজে সমাধান করতে পারি। এজন্য প্রথমেই আমরা সলিউশন ফ্লুয়েন্সির ছয়টি ধাপ অনুসরণ করব। যেমন-
১ম ধাপে সমস্যাটি চিহ্নিত করব। ২য় ধাপে সমস্যার উৎস খুঁজে বের করব। ৩য় ধাপে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য একাধিক সমাধান নিয়ে ভাবব। ৪র্থ ধাপে সমস্যা সমাধানের একাধিক উপায় থেকে যাচাই-বাছাই করে একটি উপায় বেছে নিয়ে নকশা তৈরি করব। ৫ম ধাপে তৈরি করা নকশার পুরো অবয়ব (স্টোরিলাইন) উন্মুক্ত করব। সর্বশেষে ষষ্ঠ ধাপে তৈরি করা নকশার সাথে আমাদের আগের কোনো অভিজ্ঞতা তুলনা করে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কাজ-৩: সমস্যা সমাধানের ধাপ অনুসরণ করে সমস্যাটির সমাধান করার একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
উত্তর: আমাদের এলাকায় আর্সেনিক একটি বড় সমস্যা। তবে এ সমস্যাটি আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খুব সহজে সমাধান করতে পারি। এজন্য প্রথমেই আমরা সলিউশন ফ্লুয়েন্সির ছয়টি ধাপ অনুসরণ করব। যেমন- ১ম ধাপে সমস্যাটি চিহ্নিত করব। ২য় ধাপে সমস্যার উৎস খুঁজে বের করব। ৩য় ধাপে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য একাধিক সমাধান নিয়ে ভাবব। ৪র্থ ধাপে সমস্যা সমাধানের একাধিক উপায় থেকে যাচাই-বাছাই করে একটি উপায় বেছে নিয়ে নকশা তৈরি করব। ৫ম ধাপে তৈরি করা নকশার পুরো অবয়ব(স্টোরিলাইন) উন্মুক্ত করব। সর্বশেষে ষষ্ঠ ধাপে তৈরি করা নকশার সাথে আমাদের আগের কোনো অভিজ্ঞতা তুলনা করে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।