ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সমাধান ধাপ ২ - Solution steps of the annual summative assessment of sixth grade science subjects; 2

Mohammad Rashed
2

ধাপ ২ (দ্বিতীয় কর্মদিবস : ১০ মিনিট)

ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সমাধান ধাপ ২ - Solution steps of the annual summative assessment of sixth grade science subjects; 2

প্রশ্ন:

দ্বিতীয় সেশনের শুরুর ৩০ মিনিট তারা তাদের নির্ধারিত দুইটি প্রযুক্তির নকশা এঁকে নিতে পারে, বা মডেল তৈরি করতে পারে। এরপর বাকি সময়ে তারা নকশা/ মডেল এবং এদের কার্যপদ্ধতির প্রবাহচিত্র উপস্থাপনের পাশাপাশি সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এগুলো কীভাবে কাজ করে তার ওপর দলীয় উপস্থাপন করবে। উপস্থাপনের উপর ভিত্তি করে PI (৬.৪.১, ৬.৪.২ ও ৬.৫.১) এর ইনপুট দেবেন, এই ক্ষেত্রে দলের সবার PI এর ইনপুট একই হবে। তবে দলে প্রতি শিক্ষার্থীর ভূমিকা নির্দিষ্ট থাকতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সে দায়িত্ব পালন করেছে কিনা তা শিক্ষক পর্যবেক্ষণ করবেন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের ভূমিকা দলীয় পারদর্শিতার উপর প্রভাব ফেলবে তা মনে করিয়ে দিন।

কাজ: আমার নির্ধারিত দুইটি প্রযুক্তি হলো কম্পিউটার এবং বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি । এদের নকশা অঙ্কন করা হলো: 

সমাধান:


কম্পিউটার কাজ করার ফ্লো চার্ট বা প্রবাহ চিত্র:

বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি যেভাবে কাজ করে: বৈদ্যুতিক ইস্ত্রিত্বে একটি অভ্রের প্লেটের গায়ে সংকর ধাতু নাইক্রোমের সরুতার জড়ানো থাকে। এই প্লেটের উপরে ও নিচে দুটি অভ্রের পাতা দিয়ে ঢেকে লোহার পাত দিয়ে চেপে রাখা হয়। অভ্র বিদ্যুৎ অপরিবাহী কিন্তু তাপ পরিবাহী। তাই তারের ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে তা লোহাকে স্পর্শ করে না কিন্তু তার উত্তপ্ত হলে তা লোহাকে উত্তপ্ত করে। ইস্ত্রির বাহিরের আবরণটি স্টেইনলেস স্টীলের তৈরি, ত্রিভুজাকৃতি এবং ভারী। কুন্ডলীর ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে বাহিরের আবরণটি উত্তপ্ত হয়।

কম্পিউটার যেভাবে কাজ করে: কম্পিউটার এমন একটি ইলেক্ট্রনিক গণনাকারী যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তথ্যকে বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপন করে। ব্যবহারকারী কোনো ডেটা বা উপাত্ত কম্পিউটারে সরবরাহ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটার কাজের ফলাফল প্রদান করে।

কম্পিউটারের প্রধান অংশ ৪টি

ইনপুট: কম্পিউটারকে আমরা কোনো কাজ করার জন্য ডেটা সাপ্লাই দেই এর মাধ্যমে।

প্রসেসর: কম্পিউটার ডেটাকে প্রসেস করে।

মেমোরি: এখানে ডেটা প্রসেসিং এর পর ডেটা সেইভ থাকে, সেটা হতে পারে অস্থায়ী, হতে পারে স্থায়ী ।

আউটপুট: এর মাধ্যমে আউটপুট বা ফলাফল দেখা যায়।


প্রশ্ন:

তৃতীয় সেশনের আগে শিক্ষার্থীরা এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে সেগুলোর পরিবেশগত প্রভাব অনুসন্ধান করবে; এসময়ে তারা জ্বালানির ব্যবহার ও অপচয়, বিভিন্ন ধরনের দূষণ, মানবস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ইত্যাদি সকল বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে। শিক্ষার্থীদের কাজ। বুঝিয়ে দিন।

সমাধান:

পরিবেশের উপর প্রভাব: কম্পিউটার বা বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি পরিবেশের উপর প্রভাব নির্ভর করে এটি কী ধরনের শক্তি ব্যবহার করে এবং এটি কতটা দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে।

জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা চালিত কম্পিউটার বা বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যাগুলি অবদান রাখতে পারে। নবায়নযোগ্য শক্তি দ্বারা চালিত প্রযুক্তিগুলো পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর। ডিজিটাল বৈদ্যুতিক ইস্ত্রিগুলি কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে যা পরিবেশের উপর কম চাপ সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন কাজে আমরা জ্বালানি ব্যবহার করি:

বিদ্যুৎ উৎপাদন: বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি জীবাশ্ম জ্বালানি, পারমাণবিক জ্বালানি বা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে।

পরিবহন: গাড়ি, বিমান, জাহাজ এবং অন্যান্য যানবাহনগুলি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে চলাচল করে।

উৎপাদন: করাখানাগুলি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করে।

গৃহস্থালী: গৃহস্থালির কাজে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। যেমন: গ্যাস, তেল এবং কয়লার ব্যবহার।

জ্বালানির অপচয় রোধ করার উপায়:

১। জেনারেটরের কাজ শেষ হলে বন্ধ করতে হবে।
২। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পর সুইচ বন্ধ রাখুন।
৩। রান্নার পর চুলা বন্ধ রাখুন।

জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ধরনের দূষণ হতে পারে। যেমন:

বায়ু দূষণ: জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য দূষক পদার্থ নির্গত হয়ে বায়ুকে দূষিত করে। এর ফলে হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে।

পানি দূষণ: জীবাশ্ম জ্বালানি খনন এবং পরিশোধনের ফলে পানি দূষিত হতে পারে । এই দূষক পদার্থগুলি পানীয় জল, মৎস সম্পদ এবং অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মাটি দূষণ: জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর পদার্থগুলি মাটির সাথে মিশে মাটিকে দূষিত করে।

মানবস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব:

আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর নানাভাবে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। ফুসফুসের নানা রোগ, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার, লিউকোমিয়া, অটিজম, চোখের জ্বালা, মাথাব্যাথা, ক্লান্তি, অনিদ্রা, ত্বকের সমস্যা, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া, বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়াসহ অনেক শিশু দূষণের ফলে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। তাছাড়া দূষিত মাটিতে উৎপন্ন ফসল খাদ্য হিসেবে খেলে মানুষ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

প্রশ্ন:

দলীয় কাজের পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার দলের পুরো কাজের প্রক্রিয়া, দলের সদস্যদের কাজ বণ্টন ও দলে নিজের ভূমিকা উল্লেখ করে একটি সংক্ষিপ্ত লিখিত প্রতিবেদন তৈরি করবে। সেখানে এই কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন এসেছে। তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করবে।

সমাধান:

দলগত কাজের প্রতিবেদন

৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের সম্পূর্ণ মূল্যায়নের কাজগুলোতে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। বিশেষকরে দলগত কাজগুলো করার মাধ্যমে টিম ওয়ার্ক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিভাবে সবাই মিলে নির্দিষ্ট একটি কাজ পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করতে হয়। এবং সবার মতামতকে সম্মান দিয়ে তাদের ধারণাগুলোকে নিয়ে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতিতে সমাধান করা যায়।

আমার দলের সদস্য ছিল ৭ জন, প্রত্যেকেই আলাদা আলাদাভাবে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে । দলের আমার ভূমিকা ছিল মূলত গ্রুপ লিডার হিসেবে। সঠিকভাবে সবার কাজ হয়েছে কিনা এবং নিজের কাজগুলো মূল্যয়নের জন্য প্রস্তুত রাখা। 

দলের প্রত্যেকের কাজের তালিকা নিচে দেওয়া হলো-

১। জাবের- কম্পিউটারের নকশা অঙ্কন করেছে।
২। রিয়াদ- বৈদ্যুতিক ইস্ত্রির নকশা অঙ্কন করেছে।
৩। হামিদ- কম্পিউটারের ফ্লোচার্ট তৈরি করেছে।
৪। আবির - বৈদ্যুতিক ইস্ত্রির ফ্লোচার্ট তৈরি করেছে।
৫। গোতম - জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের উপর প্রভাব এবং জ্বালানির ব্যবহার ও অপচয় রোধ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে।
৬। সজীব- বিভিন্ন ধরনের দূষণ এবং মানবস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করেছে।
৭। রাকিব- সার্বিক তদারকি করেছে।

ব্যক্তিগত জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহারে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সড়কপথ, রেলপথ, আকাশপথ, জলপথ প্রভৃতি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ব্যপকভাবে ব্যবহার, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ, দ্রুততর ও লাভজনক করে তুলেছে। এছাড়া মোবাইল, ই-মেইল, ফেইসবুজ ইত্যাদি যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্ন এনেছে।

সবশেষে বলা যায়, সামগ্রিক মূল্যায়ন পদ্ধতি আমার খুব ভালো লেগেছে। প্রত্যেকের মধ্যে একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতা করার মনোভাব জাগ্রত হয়েছে এবং নতুন কিছু শিখতে পেরেছি। মূলত সম্পূর্ণ মূল্যায়নটাই ছিল গ্রুপ ওয়ার্ক।

Post a Comment

2Comments

  1. কম্পিউটার ব্যবহারে জ্বালানির অপচয় এই প্রশ্নের উত্তর দিবেন

    ReplyDelete

  2. কম্পিউটার ব্যবহারের ফলো চাট

    ReplyDelete
Post a Comment

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!